মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫

গোপালপুরে ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন, অনুপস্থিতি বাড়ছে

 

মো. রুবেল আহমেদ

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সেনেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। মাত্র কয়েক বছর আগেই নির্মিত বিদ্যালয়ের দুই কক্ষের ভবনটি বর্তমানে এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যে, সম্প্রতি ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাদের ফ্যান পড়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আহত হন।

ভবনটির বিভিন্ন দেয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ছাদের প্লাস্টার খুলে পড়ছে। ফলে ভবনটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের আরেকটি পুরনো তিন কক্ষের টিনের চালা পাকা ঘরে আপাতত পাঠদান চালানো হলেও সেটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।

বৈরাণ নদের তীরে অবস্থিত বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে। ঘরের বারান্দার খুঁটি ভেঙে পড়েছে এবং ঘরের পাশে একটি আমড়া গাছ বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে আছে, যা যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।


গত ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার বিদ্যালয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপস্থিত শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল মাত্র ৮–১০ জন। তখন শুধুমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন,

বিদ্যালয়ে মোট ৫টি শিক্ষকের পদ থাকলেও প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য। আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। দুইজন শিক্ষিকা মাতৃত্বজনিত সমস্যায় ছুটিতে, একজন শিক্ষকের স্ত্রীর পরীক্ষা থাকায় তিনি অনুপস্থিত। এছাড়া বিদ্যালয়ের পিয়ন একটি মামলায় কারাগারে আছেন। একা হাতে সব সামলানো কঠিন। পাঠদানের পাশাপাশি অফিসের কাজ, টিকা নিবন্ধনের কাজও করতে হচ্ছে। ফলে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। ভবনগুলো এতটাই জরাজীর্ণ যে অভিভাবকরা সন্তানদের পাঠাতে ভয় পান। বিদ্যালয়ে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী থাকলেও নিয়মিত উপস্থিত থাকে মাত্র ২০–২৫ জন। বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ও নিরাপদ ভবন নির্মাণ এখন খুবই জরুরি।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি গোপালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি বিলকিস সুলতানা বলেন, ফ্যান পড়ে আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য বলেছি। পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন ভবনের জন্য লিখিত আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি। শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি জানিনা।

গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার সকল ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়েও খোঁজ নিবো।


SHARE THIS

Author:

সঠিক তথ্য পেতে সবসময় সমাবেশ ডটকমের সাথে থাকুন।

0 মন্তব্য(গুলি):